চীনে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ দেখা দেওয়ার পর যখন তা বিশ্বব্যাপী মহামারীতে পরিনত হয়েছিল ঠিক সেই সময় থেকেই বিশেষজ্ঞরা খুবই তৎপর হয়ে উঠেছিলেন করোনার প্রতিষেধক টিকা বা রোগ নির্মূলের জন্য ওষুধ আবিষ্কারের ক্ষেত্রে।
রিসার্চের পর যখন জানা গেলো হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন ট্যাবলেট, মূলত ম্যালেরিয়া এবং আর্থ্রাইটিসের চিকিৎসায় ব্যবহার হয়, সেটাই ব্যবহার করে করোনাভাইরাসের চিকিৎসায় কিছু কিছু ক্ষেত্রে পজেটিভ রেজাল্ট পাওয়া গিয়েছে এবং সেইসঙ্গে প্যারাসিটামল ট্যাবলেটও কাজ করছে, তখনই হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের সর্বাধিক উৎপাদক ভারত যাতে নিজের দেশে ঘাটতি না হয় তাই রপ্তানি বন্ধ করে দিলো।
বিশ্বব্যাপী ভারতের কাছে আবেদন জানিয়েছে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন এর উৎপাদন বাড়াতে এবং তা প্রয়োজন অনুযায়ী রপ্তানি করতে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প একরকম ধমকির ভঙ্গিতেই বলেছিলেন ভারত যদি হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন না দেয় তবে ফল ভালো হবে না। যদিও তিনি পরবর্তীতে জানান তার বক্তব্যের ব্যাখ্যা আলাদা ছিলো। কিন্তু সমস্ত বিশ্বব্যাপী এই ওষুধের এত চাহিদা দেখে ভারত এই দুটি ওষুধের রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা তুলে নিলো।
কিন্তু ভারত থেকে জানানো হয় যে চলতি বছরে প্রায় ৫৫টি দেশ হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ও প্যারাসিটামল চাওয়া হয়েছে কিন্তু ভারত সব দেশে রপ্তানি করলেও প্রতিবেশী দেশগুলো অগ্রাধিকার পাবে। ভারতের বিদেশ নীতি অনুযায়ী বিশ্বব্যাপী যদি কোন কিছুর চাহিদা হয় আর তা ভারতকে সরবরাহ করতে ড়য় তবে তার উপর অগ্রাধিকার থাকবে ভারতের প্রতিবেশী রাষ্ট্রের।
এই নীতি অনুযায়ী ভারত বিদেশমন্ত্রক জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশ কুড়ি লাখ হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইন, নেপাল ও শ্রীলঙ্কা কে দশ লাখ করে আর আফগানিস্তানকে এবং মালদ্বীপকে পাঁচ লাখ করে ট্যাবলেট দেওয়া হবে।
এই তালিকায় পাকিস্তানের নাম ছিলো না কারন শুরুতে পাকিস্তান ভারত থেকে ওষুধ নেবে এমন তারা জানায় নি। আর পরে জানালেও তা ভারতের পক্ষে দেওয়া কতটা সম্ভব সেটাও বিচার্য বলে জানিয়েছেন উচ্চপদস্থরা।
এরপরই এই সপ্তাহে ভারত থেকে প্রথম দফায় এক লক্ষ হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন এবং পঞ্চাশ হাজার সার্জিক্যাল গ্লাভস বাংলাদেশ কে উপহার স্বরূপ পাঠায় ভারত এবং বিদেশ মন্ত্রক থেকে এই শুভেচ্ছা বার্তাও পাঠানো হয়েছে যে এই ওষুধ ব্যাবহার করে বাংলাদেশ যেনো করোনা আক্রান্তদের রোগ নিরাময়ের ব্যাবস্থা করে।